রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্স-
ঢাকা ক্রাইম নিউজ: ফ্লাইং করার শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করলেই যুক্তরাজ্য কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি প্রধানের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ইউকে ও ইউএসএর হাসপাতালের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। ম্যাডামের মেডিকেল বোর্ডের যোগাযোগ আগে থেকে হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব উনার শারীরিক সুস্থতা ফ্লাইংয়ের মতো হলেই বিদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখা হবে।’ বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে রাতে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক। ব্রিটিশ হাইকমিশনারের পতাকাবাহী গাড়ি খালেদা জিয়ার বাসা ‘ফিরোজা’য় প্রবেশ করে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠান হয়। ব্রিটিশ হাইকমিশনার সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তার স্বাস্থ্যে খোঁজখবর নেন।
সাক্ষাতের পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ম্যাডামের স্বাস্থ্য নিয়ে কূটনৈতিক মহলে শঙ্কা ছিল, চিন্তা ছিল…উনার সুস্থতা নিয়ে সকলের একটা প্রশ্ন ছিল। যেহেতু ম্যাডাম একটা পর্যায়ে কূটনীতিকদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারছেন…দেশে একটা মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এই পরিবর্তনে। বাংলাদেশে মুক্ত পরিবেশে কূটনীতিকরা তাদের কাজগুলো এখন করতে পারছেন।’
তিনি বলেন, ‘ওদের প্রথম জানার বিষয় ছিল ম্যাডামের শরীর কেমন আছে… ভালো আছে কিনা? উনার চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি আছে কিনা… এসব বিষয় আলোচনা করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় কথা হয়েছে এই পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে, যে নতুন প্রেক্ষাপটে আমরা কোথায় যাচ্ছি, বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে এই বিষয় নিয়ে ম্যাডামের সাথে কথা বলেছেন।’
‘ইউকের সাথে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক, তাদের যে ভাবনা- সেটা ম্যাডামকে তারা বলেছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ব্রিটেন কী করতে চায়, দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে তারা কী করতে চায়- সেগুলো ম্যাডামকে অবগত করেছেন।’ আমীর খসরু বলেন, ‘ম্যাডাম যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার কথা বলেছেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামকে বিদেশে নিতে তার যে দীর্ঘ সময়ের জার্নি, সে বিষয়ে তার প্রস্তুতির বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। মেডিকেল বোর্ড বলেছে, ইউকেতে নেওয়া হলে ৮ থেকে ১৩ ঘণ্টা সময় লাগে অথবা ইউএসএ নিতে হলে ১৮ থেকে ২১ ঘণ্টা ফ্লাইং আওয়ার লাগবে… কাজেই শারীরিক সুস্থতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
ফিরোজায় পৌঁছলে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে অভ্যর্থনা জানান খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার ও সদস্য অধ্যাপক এএফএম সিদ্দিক এবং দলের স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপারসনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুক্তি দেওয়ার পর প্রায় দেড় মাস এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিসাধীন থেকে গত ২১ আগস্ট ফিরোজায় ফেরেন তিনি। ২০১৮ সালে কারাবরণ ও হাসপাতালে চিকিৎসার পর এই প্রথম ব্রিটিশ হাইকমিশনার ফিরোজায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাতে এলেন।